ভিজিএফ কার্ড দেওয়ার কথা বলে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দেলোয়ার হোসাইনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সাটুরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দেলোয়ার হোসাইন বরাইদ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত তোফাজ্জল হোসেন ওরফে তোফা মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেলোয়ার হোসাইনের কাছে এক দরিদ্র গৃহবধূ ভিজিএফের ১০ টাকা কেজি দরের চালের একটি কার্ড চান। আজ দিচ্ছি কাল দিচ্ছি বলে কালক্ষেপ করতে থাকেন দেলোয়ার। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে তিনি গৃহবধূর মোবাইল ফোনে কল দিয়ে জানান যে তার ভিজিএফ কার্ড হয়ে গেছে। রাতেই ওই নারীকে কার্ড নিতে যেতে বললে তিনি সকালে নেবে বলে জানান। কিন্তু ওই ইউপি সদস্য রাতেই তার হাতে কার্ড পৌঁছে দেবেন বলে জানান। পরে গভীর রাতে ওই গৃহবধূর বাড়িতে যান ইউপি সদস্য দেলোয়ার। সেখানে তিনি ওই গৃহবধূকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের একপর্যায়ে গৃহবধূ চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেন।
পরে দেলোয়ারকে ছাড়িয়ে নিতে স্থানীয় মাতব্বররা চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তারা আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ারও প্রস্তাব দেন। একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে দেলোয়ারকে ছাড়িয়ে নেন তারা।
নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইউপি সদস্য দেলোয়ারের নামে এ ধরনের অভিযোগ শুনে আসছিলাম। তিনি সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে দুস্থ নারীদের অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতেন। আমরা দেলোয়ারের কঠিন শাস্তি চাই।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, আমি দুই সন্তান ও স্বামী নিয়ে কষ্টে জীবন যাপন করে আসছি। তাই ১০ টাকা দরের চাল কিনতে ভিজিএফ কার্ডের জন্য বেশ কিছু দিন ধরেই ইউপি সদস্য দেলোয়ারের পেছন পেছন ঘুরছিলাম। সে প্রথম দিক থেকেই কার্ডের বিনিময়ে কিছু চাচ্ছিল, তখন আমি বিষয়টি ভালোভাবে বুঝে উঠতে পারিনি। হঠাৎ করেই মঙ্গলবার রাতে সে ফোন করে আমাকে কার্ড নিতে তার বাড়িতে যেতে বলে। ওই সময় আমি তাকে সকালে আসব বলে জানাই, কারণ আমার স্বামী বাড়িতে নাই। তখন সে বলে ঠিক আছে, তোমার আসতে হবে না, আমিই কার্ড নিয়ে আসছি। সে আমার বাড়িতে এসে ফোন করে বাইরে বের হতে বলে। ঘর থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে আমাকে ধর্ষণ করে। এসময় আমার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন চলে আসে এবং তাকে আটকে রাখে। পরে আমি সাটুরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করি।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় আসামি দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।